স্যামন মাছ কি স্যামন মাছের মূল্য স্যামন মাছের কোন আমিষ থাকে Salmon fish
স্যামন মাছ কি স্যামন মাছের মূল্য স্যামন মাছের কোন আমিষ থাকে Salmon fish
স্যামন বা স্যালমন হচ্ছে পিঙ্ক-কমলা হতে হালকা পিঙ্ক পরিসরের ১টি কমলা রঙ যা স্যামন বা স্যালমন মাছের মাংসের রঙের সদৃশ। অস্ট্রেলিয়ায় অবগত স্যামন বেশিরভাগই কমলা রঙের হয়ে থাকে।
যেন কোনো মানুষের স্বদেশ হতে বিদেশ যাত্রা। আবার পরিণত বয়সে বিদেশ থেকে মাতৃভূমিতে ফিরে আসা। স্যামন মাছের জীবন প্রকৃতি যেন সেই সেইম পদ্ধতিতে বাঁধা। দরিয়া থেকে সাগরে, আবার সমুদ্র হতে ফিরে আসা সেই নদীতেই- এই হলো প্রশান্ত মহাসাগরে স্যামন মাছের এক লম্বা ভ্রমণ যাত্রা।
স্যাম্যান মাছের ভ্রমণ বৃত্তান্ত
স্যামন মাছের উৎপত্তি নদীতে। ডিম ফুটে স্যামনের উদ্ভব হয়ে যায় ৫০-১০০ দিনে। ডিম ফুটে যে বাচ্চার উদ্ভব হয় তাকে হয় ‘অ্যালভিন’। সপ্তাহ দু-তিন দিন পর ছোট্ট স্যামন রওনা দেয় সাগরের উদ্দেশ্যে।তখন তাকে হয় ‘ফ্রাই’। ছোট ছোট মাছের ঝাঁক হতে কতিপয় খেয়ে গ্রহণ করে পাখি, কিছু খেয়ে নেয় আরেক মাছ। তবু তারা চলতেই থাকে। ভ্রমণপথেই খুঁজে গ্রহণ করে খাবার। বড় হয় চলতে চলতে।
একটু বৃহৎ হলে তাদের বলা হয়ে থাকে ‘স্মোল্ট’। এ স্মোল্ট ঢুকে পড়ে সাগরে। সেখানে বেড়ে ওঠে পরিপূর্ণভাবে। সেই সময় সে পূর্ণবয়স্ক স্যামন। কামরায় ফেরার পালা। বয়স্ক স্যামনরা ঝাঁক বেঁধে ফিরতে থাকে নদীতে, যেখানে তাদের উৎপত্তি হয়েছিল। ফিরে এসে বংশবৃদ্ধি এবং অতঃপর মৃত্যু। সন্তানের উদ্ভব দিয়ে স্যামন বাবা-মা মারা যায়। তখনই সকল সংগ্রামের অবসান। নিউ স্যামনের ঝাঁক এবার বেরোয় ভ্রমণে, এভাবেই চলতে থাকে তাদের জীবনচক্র।
কীভাবে খুঁজে গ্রহণ করে স্যামন তার নিজের জন্মস্থান
সমুদ্রে এরা প্রায় ১০ হাজার মাইল ভ্রমণ করে। বছরখানেক সমুদ্রে কাটিয়ে স্যামন যখন ফেরে,
যেসব দেশের বিচরণ
সবচেয়ে আকার ও আয়তনের পক্ষ হতে নানা জাতের স্যামন
সবচেয়ে স্টিলহেড ব্যতীত এদের সকলেরই জীবনধারা মোটামুটি সেইম ধরনের। অর্থাৎ, নদীতে জন্ম, জন্মের পরেই সমুদ্রভ্রমণে বেরিয়ে পড়া, পূর্ণ বয়সে বংশবৃদ্ধির জন্য পুরনো নদীতেই ফিরে এসে বংশবিস্তার ও মৃত্যু। তবে স্টিলহেড এবং আটলান্টিক মহাসাগরের স্যামন মাছের বেলায় এ বিধানের কিছুটা হেরফের ঘটে। এরা বেশ কয়েকবার ডিম দিতে পারে।
বছরের পুরনো এক প্রজাতি। কামচাটকা উপদ্বীপের উসকিতে প্রত্নতত্ত্ববিদরা মাটি খুঁড়ে ১১,০০০ বছরের পুরনো স্যামন মাছের হাড় ও মানুষের দেহাবশেষ পেয়েছেন। গবেষকদের ধারণা, ঐ সময় উসকিতে স্যামন মাছের একটা প্রজননক্ষেত্র ছিল।
সেই সময় নব্য প্রস্তর যুগের ব্যক্তি ডাঙা ত্যাগ খাদ্যের খোঁজে নেমে পড়লো জলে। সে টাইম বৃহৎ বড় সামুদ্রিক প্রাণী, তিমি, সিন্ধুঘোটক, স্যামন- এসব বিস্তর পাওয়া যেত। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে জলে শিকার চালাতো তারা।
যেসব
মার্কিন মুলুকের কলম্বিয়া, স্কিনা, শাক্রামেন্টো, বেল্লাকুলা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে স্যামন মাছ দেখা যায়।এছাড়াও রাশিয়ার নিকট সাখালিন দ্বীপের অচেপুকা তরঙ্গিণী বা আলাস্কা অঞ্চলের ইউকন নদী, আবার এদিকে জাপানের কাছকাছি আমুর নদীতে স্যামনের প্রাচুর্য নোটিশ যায়। সাখালিনের অচেপুকা নদীতে স্থানীয় মানুষজন ছোট ছোট জালে কিংবা কাঠের পুরনো বাক্সে স্যামন ধরেন, কেউবা মনে করেন খালি হাতে।জাপানীদের
স্যামন মাছ খাওয়ার বিষয়ে জাপানের সাথে টেক্কা দেয়া মুশকিল। তারা গোগ্রোসে এ মাছ খায়। এর আচার, স্যাম্যান বেক, ভাজা, স্যুপ- সবই খায় জাপানীরা। এমনকী কাঁচা খেতেও আপত্তি নেই। এই মাছের পেট, ডিম, মাথা– সবই তারা খায়। স্যামন কর্তৃক বানায় বার্গার আর সসেজ।
জানা গছে, সারাবিশ্বে যত স্যামন মাছ ধরা হয়, তার বেশিরভাগ ভাগ ধরা হয় জাপানে। জাপানীরা সালের প্রায় চার লক্ষ টনের উপর স্যামন খায়। টোকিওর সুকিজি মার্কেটপ্লেসে পৃথিবীর সবচেয়ে অধিক স্যামন বেচাকেনা হয়।সূয্যি ওঠার প্রচুর প্রথমে থেকেই বাজার বসে যায়। স্যামনের ডিম মার্কিনীরা আগে ফেলে দিতো।আজকাল অবশ্য সেই ডিম প্রক্রিয়াজাত করা হয়।স্যামন মাছের
স্যামন মাছের কর্তৃত্ব নিয়ে জগৎ জুড়ে একটা মতবিরোধ রয়েছেই। আমেরিকা, কানাডা এবং জাপান রাষ্ট্রশাসক গোষ্ঠী মনে করে, জলপথে বিশ্বভ্রমণ করলেও প্রতিটি স্যামন মাছ তার জন্মভূমির নিরতিশয় আপন প্রাণী। দেশ হতে বেরোলেও দেশে ফিরে আসা তার স্বভাব।
সুতরাং, সেভিন্ন রাষ্ট্রের অধিকারে যাবে কেন? তবুও এ দৃষ্টিভঙ্গি সকলের নেই। বিশেষ করে তাইওয়ান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার জেলেদের ধারণা, মাছ প্রকৃতির দান। তাই মাছ সকলের। এরা সবাই, এমনকি, জাপানের জেলেরাও সমুদ্রে পেতে টপাটপ স্যামন ধরে। সাগরের ৩০ ফুট গভীরে থাকে এই ফাঁদ। ব্যাপারটা বেআইনি। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আইন আছে। তা সত্ত্বেও চুরি করে এই মাছ অনেক হিসাবে ধরা হয়। ইতিমধ্যে আমেরিকা ও আদার্স রাষ্ট্রের সংবাদের কাগজে এর প্রতিবাদ করে লেখালেখিও হয়েছে।
অন্যরকম এক ইতিহাস
স্যামন মাছ হাজারএখনো আছে। পুরাকালের লোক উসকি নদীর ধারে জড়ো হয়ে ভগবানের নিকট আশা করতো, অনেক সংখ্যায় স্যামন মাছ যেন পাওয়া যায়। অন্য কোনো মজার জিনিস আছে। মানুষের অতীত বৃত্তান্ত খুঁটিয়ে দেখলে জানা যায়, পুরাতন কঙ্কর যুগের লোক খাবারের জন্য প্রধানত নির্ভর করতো বাইসন, ম্যামথ- এসবের ওপর। ডাঙার এই প্রাণীর যখন গোষ্ঠী লোপ পেতে লাগলো, সেই সময় মানুষের নজর পড়লো জলে।
যেসব তটিনী এদের আতুঁড়ঘর
মার্কিন মুলুকের কলম্বিয়া, স্কিনা, শাক্রামেন্টো, বেল্লাকুলা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে স্যামন মাছ জাপানীদের কাছে স্যামন মাছের কদর
স্যামন মাছ খাওয়ার জানা গছে, সারা
স্যামন মাছের অধিকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে মতবিরোধ
স্যামন মাছের সুতরাং, সে
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে এ ধরনের কবল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই ফাঁদ পেতে স্যামন ধরার অনেক নিন্দা করা হয়েছে। স্যামন বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এভাবে মাছ নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। কারণ, সমুদ্রগামী যে স্যামন, সেটা আকারে খুবই ছোট। অথচ ওই মাছই যখন সমুদ্র থেকে ফিরতে থাকে, তার চেহারা হয়ে যায় বিরাট। তাই খপ্পর পেতে পূর্বেই ছোট স্যামন ধরে লাভটা কী?
দিতে হয়ে যায় সপ্তাহ তিনেক। তারপর রান্নার প্রশ্ন। নতুবা সরাসরি স্যামন ভীষণ ঝুঁকির ব্যাপার। হজমের বিশৃঙ্খলা হতে পারে। এই মাছে প্রোটিনের সংখ্যা প্রচুর। এর তেল রক্তে শকরার হিসাব কমায়। হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। মানব দেহের এই সুবিধাগুলোর কথা বিবেচনা করে এখন পৃথিবীর পর্যাপ্ত দেশে স্যামনের চাষ হচ্ছে।
সালের পুরনো এ মাছ মিশে গেছে কিংবদন্তির সঙ্গে। এত পুরনো প্রজাতি এতদিন ধরে যে টিকে আছে, এটাই আশ্চর্যের। জাপানের আইনুদের বিশ্বাস, হাজার হাজার বছর ধরে স্যামন মাছ যে টিকে রয়েছে তার কারণ স্যামনের আত্মা আইনুদের বাঁচানোর জন্য বারে বারে জগতে ফিরে আসে।
পুষ্টিগুণ
স্যামন ধরার পর বরফে রেখেনানা কিংবদন্তী
হাজারস্যামন মাছের সংখ্যা বিশ্বের বিভিন্ন তটিনী হতে ইতিমধ্যে বেশ গেছে। বাঁধ, দূষণ, সেচ অ্যারেঞ্জমেন্ট ইত্যাদির জন্য সালের এর সংখ্যা বেশ কমেছে। সেজন্যই বিজ্ঞানীরা ট্রাই করছেন, যেভাবেই হোক এই মাছকে টিকিয়ে রাখার জন্য হবে। বংশবৃদ্ধি বন্ধ হয়ে গেলে স্যামন মাছ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এর উপর অবলম্বন করে আছে জগতের পর্যাপ্ত মানুষের জীবিকা। প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে মিশে গিয়ে স্যামন হয়ে উঠেছে তাদের ভবিষ্যতের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক।
